সম্প্রতি ধর্ষণ নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। দুঃখজনক হল, অধিকাংশের আলোচনা পক্ষপাত দুষ্ট। বিশেষ করে মিডিয়ার আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা এই বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে তো পারছেই না, বরং নারীকে ইচ্ছেমত পোষাক পরার আহবান জানিয়ে জ্বলন্ত আগুনে আরো ঘি ঢালছে। তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার। আর তা হল, নারীদের পণ্য বানানোর যে কাজ তারা করছে, সেটাকে আরো বৃদ্ধি করা।
যাই হোক, আসুন এই বিষয়টির সমাধানে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরি এবং নারীর সম্মান রক্ষা করি। ধর্ষণের জন্য পুরুষের দৃষ্টি ভঙ্গিকে বদলাতে হবে। এখন প্রশ্ন হল- ১. পুরুষকে আমরা শিক্ষা দিব তার চোখকে হেফাযত রাখতে। ২. পুরুষকে আমরা শিক্ষা দিব ধর্ষণের জন্য নারীর পোষাককেই একমাত্র দায়ী না করতে। এই দুটো কাজই আমরা পুরুষের জন্য করতে পারি। এই দুই শিক্ষা অবশ্যই গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই দুই শিক্ষা কি যথেষ্ট হবে। অবশ্যই না।
ধর্ষণ প্রতিরোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকতে হবে। এটা হল রাষ্ট্রের দিক থেকে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ মার্কিন মুল্লুকে যথেষ্ট পরিমান থাকার পরও কি ধর্ষণের পরিমান কমেছে? ধর্ষণ প্রতিরোধে আমরা পুরুষকে শিক্ষা দিব, রাষ্ট্রকে শিক্ষা দিব, এটা অবশ্যই গুরত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা নারীকে কি কোন শিক্ষা দিব না? আমরা কি মিডিয়াকে শিক্ষা দিব না, যারা দিন রাত অবাধ যৌনাচারের শিক্ষা দিচ্ছে? যৌন সুড়সুড়ি দিয়েই নারীকে প্রদর্শন করছে? আমরা কি আমাদের বোনদের বলব না যে, নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন কর, যাতে খুবই সুস্পষ্ট হয় যে, তুমি মিডিয়ায় প্রদর্শিত যৌন সুড়সুড়ি দেওয়া নারীদের মত নও?
ধর্ষণ প্রতিরোধে সব দিক থেকে এগিয়ে আসা উচিত। গৃহস্থকে তার ঘরে তালা মারতে বলা উচিত। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে বলা উচিত। আর যাদের মনে চুরির খায়েশ আছে তাদের ইহকালীন ভয় (আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে), পরকালীন ভয় (জাহান্নামে দাখিল হওয়া) দেখানো। এবং আশা করি প্রত্যেকে তাদের নিজের কাজটা করবেন।
১. আলেমরা ধর্ষণকামী পুরুষদের জাহান্নামের শাস্তির কথা শুনাবেন, নারীদের পর্দা লংঘনে জাহান্নামের শাস্তি শোনাবেন।
২. মিডিয়া যৌন সুড়সুড়ি মূলক প্রচারণা বন্ধ করবে, নারীকে পণ্য বানানো বন্ধ করবে। নারী পুরুষ উভয়কে তাদের করণীয় সম্পর্কে আলেম ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ মূলক অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
৩. আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ধর্ষক বা ইভটিজিং কারীর বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। এবং অশালীন পোষাক পরা নারীদের সতর্ক করবেন। প্রয়োজনে আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিবেন।
লেখক: আহবায়ক, মুভমেন্ট ফর ইনসাফ।